বাংলা ব্যাকরণের গুরুত্বপূর্ণ সংজ্ঞা।

ধ্বনি কাকে বলে?

উত্তরঃ মানুষের বাগ্যন্ত্রের বিভিন্ন প্রত্যঙ্গ (যেমন—কণ্ঠনালি, জিব, তালু, দাঁত ইত্যাদির) সাহায্যে উচ্চারিত আওয়াজকে ধ্বনি বলে।


বর্ণ কী?

উত্তরঃ বাগ্যন্ত্র দ্বারা সৃষ্ট প্রতিটি ধ্বনির লিখিত রূপকে বর্ণ বলে।


স্বরবর্ণ ও ব্যঞ্জনবর্ণ কাকে বলে?

উত্তরঃ যে সব বর্ণ অন্য বর্ণের সাহায্য ছাড়া নিজে নিজে উচ্চারিত হতে পারে সেগুলোকে স্বরবর্ণ বলে। যেমন : অ, আ, ই, ঈ ইত্যাদি। আর যে সব বর্ণ অন্য বর্ণের সাহায্য ছাড়া নিজে নিজে উচ্চারিত হতে পারে না সেগুলোকে ব্যঞ্জনবর্ণ বলে। যেমন : ক + অ = ক, খ + অ = খ, গ + অ = গ ইত্যাদি।


বর্ণমালা কাকে বলে?

উত্তরঃ যেকোনো ভাষায় ব্যবহৃত লিখিত বর্ণসমষ্টিকে সেই ভাষার বর্ণমালা বলে।


শব্দ কাকে বলে?

উত্তরঃ এক বা একাধিক অর্থবোধক ধ্বনির সমন্বয়ে গঠিত সমষ্টিকেই মূলত শব্দ বলে। যেমন– বক, বল, বই, কলম, ছাতা ইত্যাদি।


প্রাতিপদিক কাকে বলে?

উত্তরঃ বিভক্তিহীন নাম শব্দকে প্রাতিপদিক বলে।


প্রকৃতি ও প্রত্যয় কাকে বলে?

উত্তরঃ কোনো শব্দের যে অংশকে আর কোনো ক্ষুদ্রতর অংশে ভাগ করা যায় না, তাকে প্রকৃতি বলে। আর শব্দ গঠনের উদ্দেশ্যে নাম প্রকৃতির এবং ক্রিয়া প্রকৃতির পরে যে শব্দাংশ যুক্ত হয়, তাকে প্রত্যয় বলে।


উপসর্গ কাকে বলে?

উত্তরঃ শব্দ বা ধাতুর আগে কতিপয় সুনির্দিষ্ট অব্যয়জাতীয় শব্দাংশ যুক্ত হয়ে সাধিত শব্দের অর্থের পরিবর্তন, সম্প্রসারণ ও সংকোচন ঘটিয়ে থাকে, সেগুলোকে উপসর্গ বলে।


কার ও ফলা

স্বরবর্ণের সংক্ষিপ্ত রূপকে কার বলে এবং বর্ণের সংক্ষিপ্ত রূপকে ফলা বলে।


অঘোষ ধ্বনি

যখন কোনো ধ্বনি উচ্চারণের সময় স্বরতন্ত্রী অনুরণিত হয় না, তখন সেই ধ্বনিকে বলা হয় অঘোষ ধ্বনি।


ঘোষ ধ্বনি

যখন কোনো ধ্বনি উচ্চারণের সময় স্বরতন্ত্রী অনুরণিত হয়, তখন সেসব ধ্বনিকে ঘোষ ধ্বনি বলে।


অন্তস্থ ধ্বনি

স্পর্শ বা উষ্মধ্বনির মধ্যে থাকা ধ্বনিগুলোকে (য, র, ল, ব) অন্তস্থ ধ্বনি বলে। আর বর্ণগুলোকে                        অন্তস্থ বর্ণ বলে।


উষ্মধ্বনি     : যে ধ্বনির উচ্চারণে বাতাস মুখের কোথাও বাধা পায় না; বরং ঘর্ষণপ্রাপ্ত হয়ে এক ধরনের                             শিশধ্বনির সৃষ্টি হয়, সেটিই উষ্মধ্বনি।


আদি স্বরাগম        : উচ্চারণের সুবিধার জন্য শব্দের আদিতে অর্থাৎ শুরুতে যদি স্বরধ্বনি আসে, তবে তাকে আদি স্বরাগম বলা হয়।


বিপ্রকর্ষ       : উচ্চারণের সুবিধার জন্য সংযুক্ত ধ্বনির মাঝখানে স্বরধ্বনি এলে, তাকে মধ্য স্বরাগম/বিপ্রকর্ষ/ স্বরভক্তি বলে।


অন্ত্যস্বরাগম         : শব্দের শেষে অতিরিক্ত স্বরধ্বনি এলে একে অন্ত্যস্বরাগম বলে।


অপিনিহিত : পরের ই-কার আগে উচ্চারিত হলে তাকে অপনিহিত বলে।


অসমীকরণ          : একই আওয়াজ বা ধ্বনির পুনরাবৃত্তি দূর করার জন্য মাঝে যখন কোনো স্বরধ্বনি যুক্ত হয়, তখন   তাকে অসমীকরণ বলে।


স্বরসংগতি   : একটি স্বরধ্বনির প্রভাবে শব্দে অপর স্বরের পরিবর্তন ঘটলে তাকে স্বরসংগতি বলে।


সম্প্রকর্ষ      : দ্রুত উচ্চারণের জন্য শব্দের আদি, অন্ত্য বা মধ্যবর্তী কোনো স্বরধ্বনির লোপকে সম্প্রকর্ষ বা স্বরলোপ বলে।


সমীভবন     : শব্দের মাঝে থাকা দুটি ভিন্ন ধ্বনি যখন একে অপরের প্রভাবে সমতা লাভ করে, তখন উক্ত  প্রক্রিয়াকে সমীভবন বলে।


বিষমীভবন : একাধিক সমবর্ণের একটি পরিবর্তনকে বিষমীভবন বলে।


ভবিষ্যৎ কাল কাকে বলে?

যে ক্রিয়া দ্বারা কোনো কাজ এখনও শুরু হয়নি কিন্তু ভবিষ্যতে শুরু হবে এরূপ বুঝায়, তাকে ভবিষ্যৎ কাল বলে। যেমনঃ নাজিয়া পরীক্ষা দিবে, কাফি স্কুলে যাবে ইত্যাদি।


দ্বিত্ব কাকে বলে?

কখনো কখনো শব্দের জোর দেওয়ার জন্য শব্দের অন্তর্গত ব্যঞ্জনের দ্বিত্ব উচ্চারণ হয়, আর একেই দ্বিত্বা বা দ্বিত্ব বলে।


ধ্বনি বিপর্যয় কাকে বলে?

শব্দের দুটি ব্যঞ্জনের পরস্পর পরিবর্তন ঘটলে, তাকে ধ্বনি বিপর্যয় বলে।


অন্তর্হতি কী?

পদের মধ্যে কোনো ধ্বনি লোপ পেলে তাকে বলা হয় অন্তর্হতি।


বিকৃতি কী?

শব্দের মধ্যে কোনো কোনো সময় কন পরিবর্তিত হয়ে নতিন ধ্বনি ব্যবহৃত হয়, একে বলা হয় বিকৃতি।




সকর্মক ক্রিয়া : যে ক্রিয়া কর্মপদযুক্ত তাকে সকর্মক ক্রিয়া বলে। যেমন– লোকটি গান শুনছে।


অকর্মক ক্রিয়া : বাক্যের অন্তর্গত যে ক্রিয়া কোনো কর্ম গ্রহণ করে না তাকে অকর্মক ক্রিয়া বলে। যেমন– সজীব খেলছে।


দ্বিকর্মক ক্রিয়া : বাক্যস্থিত যে ক্রিয়া দুটি কর্ম গ্রহণ করে তাকে দ্বিকর্মক ক্রিয়া বলে। যেমন– আমি মিতাকে একটি ফুল দিয়েছি।


প্রযোজক ক্রিয়া : কর্তার যে ক্রিয়া অন্যকে দিয়ে করানো বোঝায় তাকে প্রযোজক ক্রিয়া বলে। যেমন– শিক্ষক ছাত্রকে অংক দেখাচ্ছেন।


পারিভাষিক শব্দ কাকে বলে?

উত্তরঃ বাংলা ভাষায় প্রচলিত বিদেশি শব্দের ভাবানুবাদমূলক প্রতিশব্দকে পারিভাষিক শব্দ বলে।

Comments

Popular posts from this blog

ব্যান্ডউইথ কাকে বলে? কত প্রকার ও কী কী?

আলোর প্রতিফলন কি? আলোর প্রতিফলন কত প্রকার ও কি কি?

৬ষ্ঠ শ্রেণির বিজ্ঞান ১ম অধ্যায় প্রশ্ন ও উত্তর